ঠিক যেন পুনঃজন্ম

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭ সময়ঃ ১২:১৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:১৪ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক:

ঘটনাটা একটা ব্রিটিশ মেয়ের। বাবা মায়ের আদরের দুলালী, নাম ডরোথি। গুটি গুটি পা ফেলে হাঁটে সে, হাসি-খেলায় লন্ডনের বাড়িটা মাতিয়ে রাখে সারাক্ষন। একদিন ঘটলো এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পা ফসকে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ডরোথি  মারাত্মক আঘাত পেলো। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল তাকে। বাবা মায়ের নাওয়া খাওয়া হারাম।  বিধাতার কৃপায় মরতে মরতেও বেঁচে উঠলো ছোট্ট ডরোথি।

কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে গেলো যখন ডরোথি বয়স সাত। একদিন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ঘুরতে গেলো পুরো পরিবার। হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করল ডরোথি। মিউজিয়ামের মিশর অংশে গিয়ে আর নড়াচড়া করতে পারলো না, অসাড় হয়ে গেলো। একটা কৃত্রিম মমির আশেপাশে ঘুরতে লাগল ডরোথি।  মাঝে মাঝে মমিটার পায়ে চুমো খেতে লাগলো। জেদ ধরল বাবা মায়ের সাথে আর ঘ
রে ফিরে যাবে না।

মিউজিয়ামের ঘটনার পর থেকেই ডরোথি মনে করতে লাগলো মিশরেই তার আসল বাড়ি, লন্ডনে তার পুনঃজন্ম হয়েছে মাত্র। মিশরে তাকে ফিরে যেতেই হবে- এমন একটা আজগুবি আবদার সে পেশ করল বাব মায়ের কাছে। প্রাচীন মিশরের দেবদেবী আর মন্দির স্বপ্নে দেখা শুরু করল। যত বড় হতে থাকলো ডরোথি, মিশর নিয়ে তার আগ্রহ ততই বাড়তে লাগলো। কলেজে পড়ার সময় মিশর সম্পর্কে লাইব্রেরিতে যত বই ছিল সব পড়ে ফেলল। মিশরীয় সভ্যতা নিয়ে যেখানে যা পাওয়া যায়, গোগ্রাসে গিলল সে।

শেষমেশ যুবতী বয়সে এক মিশরীয়কে বিয়ে করে সে পাড়ি জমালো তার স্বপ্নের দেশে। ডরোথির ঘর আলো করে  এল ফুটফুটে একটা শিশু। নিজের মেয়ের নাম  রাখল ‘সেতি’ আর নিজে ধারণ করল ‘ওম সেতি’ নাম। কিন্তু বিয়েটা বেশিদিন টিকলো না। রাতের বেলায় অস্বাভাবিক চিৎকার করা আর  খাতাভর্তি  হিবিজিবি লেখালেখির অভ্যাসের কারনে স্বামী তাকে পরিত্যাগ করে।

১৯৮১ সালে ডরোথি মারা যায়। তবে মৃত্যুর আগে প্রায় ৭০ পৃষ্ঠা জুড়ে হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে প্রাচীন মিশরের নানা কাহিনী লিপিবদ্ধ করে যায়। প্রত্নতত্ত্ববিদদের সাহায্য করে বেশকিছু স্থাপনা আবিষ্কার করতে। শেষ নিঃশ্বাস নেয়া পর্যন্ত মিশরের আবিডোসের একটি মন্দিরে বসবাস করতো ডরোথি।

ডরোথির এমন অদ্ভুত জীবনযাপনের নেপথ্যে কি ছিল?  ছোটবেলায় সিঁড়ির সেই দুর্ঘটনা? নাকি সত্যি সত্যিই পুনঃজন্ম হয়েছিল তার?

প্রতিক্ষণ/এডি/নাজমুল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G